শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

কুড়িগ্রামে পাঁচ কলেজে পাস করেনি কেউই 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে পাঁচ কলেজে পাস করেনি কেউই 

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া কুড়িগ্রামের পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করেনি। এমন ফলাফলে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। 

গত রোববার দুপুরে দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মীর সাজ্জাদ আলী স্বাক্ষরিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, এবারে এ বোর্ডের অধীন মোট ১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। যার মধ্যে কুড়িগ্রামের পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো জেলার রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা মডেল কলেজ, উলিপুর উপজেলার বাগুয়া অনন্তপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাগেশ্বরী উপজেলা সমাজকল্যাণ মহিলা কলেজ, ভুরুঙ্গামারী উপজেলার মইদাম কলেজ ও রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ আদর্শ কলেজ।

জানা গেছে, রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা মডেল কলেজে একজন, উলিপুর উপজেলার বাগুয়া অনন্তপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে চারজন, নাগেশ্বরী উপজেলা সমাজকল্যাণ মহিলা কলেজে একজন, ভুরুঙ্গামারী উপজেলার মইদাম কলেজে একজন ও রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ আদর্শ কলেজে ১১ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। 

এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করেননি। মইদাম কলেজের অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী খোদেজা খাতুনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, কলেজে তাদের মেয়ে একমাত্র শিক্ষার্থী হলেও ওই কলেজে ১২ শিক্ষকের কেউই ঠিকমত কলেজে আসতেন না। 

ফলে কলেজে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। কলেজটি সদ্য এমপিওভুক্ত হওয়ার কারণে শিক্ষকরা এখন আসা-যাওয়া করছেন। সদ্যঘোষিত এমপিওভুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া মইদাম কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বাবলু জানান, অকৃতকার্য শিক্ষার্থী খোদেজা খাতুন শুরুতে কলেজে নিয়মিত ছিলেন। 

পরবর্তীতে তার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে কলেজে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। ফলে পড়াশোনা ভালো করতে পারেননি। এ কলেজে মোট শিক্ষকসংখ্যা ১২। উলিপুরের বাগুয়া অনন্তপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজার রহমান জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পুরোনো। 

কিন্তু এইচএসসি ভর্তি শুরু হয়েছে ২০০৫ সাল থেকে। প্রতিষ্ঠানটি এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি। তিনি বলেন, সম্প্রতি এনটিআরসি থেকে ছয়জন শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। সেসব শিক্ষক নিয়মিত কলেজে আসেন না। গতবছর কোনো পরীক্ষার্থী ছিল না। এবার মোট চার ছেলে শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। তাদের ক্লাস ভালোভাবে হয়নি। এজন্য কেউ পাস করেনি।

কুড়িগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম বলেন, শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস না করা দুঃখজনক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার মান নষ্ট করছে। সরকার এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে বলে মনে করি। আমি ফলাফল দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। 

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইদুল আরিফ জানান, শতভাগ ফেল করা কলেজগুলোর ফলাফল যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

টিএইচ